একদিন চলে যাব
একদিন আমি চলে যাব-
এই কাঁঠালতলা দিয়ে,
বাঁশবাগানের পাতা ছুঁয়ে
কতদিন পেড়েছি কাঁঠাল মায়ের সাথে
বাবার সাথে কেটেছি বাঁশ-
দাদির চলে যাওয়ার দিনে!
একদিন আমি চলে যাব-
এই পুকুরধার দিয়ে-
যেখানে কেটেছে গ্রীষ্মের দূপুর-
উদ্দাম সাঁতারে
কেটেছে শীতের অলস সময়-
শীতল পানির ভয়ে!
একদিন আমি চলে যাব-
সরু পথ ধরে
আকন্দ গাছ, ভাটিপাতা, ঘাস-ফড়িং, প্রজাপতি, দূর্বা ঘাস
চেয়ে চেয়ে দেখবে আমায় মলিন মুখে!
একদিন আমি চলে যাব-
বেতনা নদীর পাড় ধরে-
সারি সারি তালগাছের পাশ দিয়ে
বাবুই পাখি দেখবে আমায় খড়ের প্রাসাদ থেকে!
একদিন আমি চলে যাব-
পুরানো মসজিদের পাশ দিয়ে
বুড়ো মুয়াজ্জিনের আজান শুনে শুনে
কতদিন পড়েছি নামাজ বাবার সাথে
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে!
একদিন আমি চলে যাব-
এই শিব মন্দির পেরিয়ে
কত দেখেছি পুজোর ঠাকুর
খেয়েছি কত প্রসাদ,
শুনেছি উলুধ্বনি সকাল-সন্ধ্যে!
একদিন চলে যাব আমি-
স্কুলঘর পিছনে ফেলে
শিশুরা খেলবে আমারই মত
যেমন খেলেছি শৈশবে!
একদিন আমি চলে যাব-
মাঝিদের কাঠালবাগান ধরে,
যেখানে শুনেছি মুর্শিদি আর পালাগান
কত-না রাত জেগে!
সে-পথে চলে যাব একদিন-
যে-পথে গেছে আমারই পূর্বজন-
একদিন আমি মিশে যাব অনন্তকালে!
চমৎকার
কবিতায় চমৎকারভাবে শৈশবের স্মৃতি উঠে এসেছে। কবির অনুভূতি উঠে এসেছে হৃদয়ের গভীর থেকে।